Basics of Fish Keeping / How to Start a Fish Tank Episode 1

fishkeeping simplified

Basics of Fish Keeping / How to Start a Fish Tank Episode 1

অ্যাকোয়ারিয়াম কেন করবেন? কিভাবে করবেন?

প্রথম পর্ব

ভাই অ্যাকোয়ারিয়াম করছিস? বিশাল খাটনি কিন্তু ভাই, সপ্তাহে সপ্তাহে জল পালটাতে হয়। মাছ বেশিদিন বাঁচে না রে, আমার পিসেমশাই করেছিল। টাকা নষ্ট বেকার খাটনি। এসব মন্তব্য শুনেছেন নিশ্চয়ই? শুনে ঘাবড়ে গেছেন? ভাবছেন অ্যাকোয়ারিয়াম বানাবো কি বানাবো না ? বানালে মাছ বাঁচাতে পারবো তো? যদি মরে যায় ….
এসব সাত-পাঁচ ভেবে ভেবে যদি কপালে ভাঁজ ফেলে থাকেন, তবে বন্ধু পাইরেটস ডেনের  এই সেগমেন্ট আপনার জন্যই …….
বেশ তবে এবার ভূমিকা-টুমিকা বাদ দিয়ে আসল কথায় আসি, বলুন তো মানুষ অ্যাকোয়ারিয়াম কেন করে? ভেবে দেখলে দেখবেন প্রধানত দুটো কারণে, এক সৌন্দর্য পছন্দ করে বলে, আর দুই মানুষ মুগ্ধ হতে ভালোবাসে বলে। যদি আপনার মধ্যে এই দুটো গুণ থাকে তবে আপনিও সফল হবেনই ।
বেশ তাহলে দেখি মেছো শখের জটিলতাগুলো বাদ দিয়ে কিভাবে শুরু করা যায়, একদম নতুন শুরু করতে হলে একজন ইচ্ছুক ব্যাক্তির মনে কতগুলো প্রশ্ন জাগে, চলুন আমরা সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে দিতে এগোতে থাকি …
১) কতবড় অ্যাকোয়ারিয়াম করবো?
যত বড়ো আপনার ইচ্ছা, শুধুমাত্র খেয়াল রাখবেন বড় অ্যাকোয়ারিয়ামের কাঁচ যেন যথেষ্ট মোটা হয়, বড় অ্যাকোয়ারিয়াম মানেই বেশি জলের চাপ তাই শক্তিশালী আঠা ও মোটা কাঁচের অ্যাকোয়ারিয়াম করাই বুদ্ধিমানের কাজ। প্রথম অ্যাকোয়ারিয়াম করলে কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে দিয়েই বানানো উচিত যাতে প্রাথমিক ভুলভ্রান্তি এড়ানো যায়। এবং সুন্দর ও টিকসই অ্যাকোয়ারিয়াম তৈরি হয় । তবে মনে রাখবেন সাধারণ অ্যাকোয়ারিয়ামের দৈর্ঘ্য প্রস্থের অন্ততঃ দ্বিগুণ ও উচ্চতা প্রস্থের সমান বা সর্বোচ্চ দেড়গুন হলে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন হয়। ২×১×১, ৩×১.৫×১.৫ ফুট ইত্যাদি সাইজের অ্যাকোয়ারিয়াম নতুনদের পক্ষে সুবিধাজনক।
(২) অ্যাকোয়ারিয়াম কোথায় রাখবো, কিভাবে রাখবো?
অ্যাকোয়ারিয়াম একটি ভারী জিনিস, কাঁচ, জল, বালি-পাথর সবকিছু মিলিয়ে একটা ছোট ২×১×১ ফুটের ছোট অ্যাকোয়ারিয়ামের ওজনই ১০০ কেজির কাছাকাছি চলে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে ছোট হোক বা বড় অ্যাকোয়ারিয়াম রাখার জন্য শক্তপোক্ত কোন কাঠের টেবিল, আয়রন বা অ্যালুমিনিয়ামের স্ট্যান্ড বানিয়ে নেওয়াই সবচেয়ে ভালো। টেবিলের উপর অ্যাকোয়ারিয়াম বসানোর আগে মোটা থার্মোকল বিছিয়ে নেওয়া খুব জরুরি। থার্মোকল বসিয়ে তার উপর ট্যাঙ্ক বসাতে হয়। এরপর দেখতে হবে অ্যাকোয়ারিয়াম বসানোর পর যেন অ্যাকোয়ারিয়াম সহ টেবিলটি একদম Stable থাকে, উঁচুনিচু না থাকে বা নড়াচড়া না করে। জলের তল অ্যাকোয়ারিয়ামের চারিপাশে সমান থাকে। নচেৎ কাঁচের একদিকে বেশি জলের চাপ পড়লে অ্যাকোয়ারিয়াম ফেটে যাওয়াও অস্বাভাবিক কিছু নয়।
অ্যাকোয়ারিয়াম রাখা উচিত বাড়ির সবচেয়ে নিরিবিলি অংশে, যেখানে মাছেরা মানুষের গতিবিধি, যান্ত্রিক শব্দ, কম্পন ইত্যাদি দ্বারা সবচেয়ে কম প্রভাবিত হবে । সাধারণত বাড়ির বারান্দা, ঘরের কোন, সিঁড়ির নীচ, বেসমেন্ট ইত্যাদি জায়গা মাছ অ্যাকোয়ারিয়াম রাখার জন্য আদর্শ। তবে সাথে এটাও খেয়াল রাখতে হবে তীব্র রোদ, ঝড়বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টির প্রকোপ পড়তে পারে এমন জায়গায় কখনোই অ্যাকোয়ারিয়াম রাখা উচিত নয়।
(৩) অ্যাকোয়ারিয়ামে কি সাবস্ট্রেট ব্যবহার করবো ?
আজকাল বাজারে অনেক ধরনের কৃত্রিম বালি পাথর পাওয়া যায়, সেগুলোর কতগুলো নির্দিষ্ট সুবিধা ও অসুবিধা আছে, দেখতে সুন্দর হলেও সেগুলো থেকে রং ওঠা, কাঁচের গায়ে দাগ পড়ে যাওয়া, জলের ভৌত ও রাসায়নিক গুনাবলীর পরিবর্তন করার মতো সমস্যা দেখা যায়। তাই শুরুতেই লাল-নীল পাথরের মোহ ত্যাগ করে সাধারণ কনস্ট্রাকশনের বালি, বালি চালা নুড়ি বা অন্য কোন নদীর বালি-পাথর সংগ্রহ করে ব্যবহার করা ভালো, এতে প্রাথমিক ঝুঁকি অনেক কম হয়, পয়সাও সাশ্রয় হয়।
তবে যে ধরনের নুড়ি-বালি ব্যবহার করুন না কেন বারবার ভালোভাবে ধুয়ে আবর্জনা একেবারে বের করে দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। অ্যাকোয়ারিয়ামে ব্যবহারের আগে যে কোন সাবস্ট্রেট কে অন্ততঃ ৭-১০ দিন আলাদা পাত্রে ভিজিয়ে রেখে তারপর পরিস্কার করে ধুয়ে ব্যবহার করা উচিত।
অ্যাকোয়ারিয়ামে সাবস্ট্রেট মাছ-গাছ-উপকারী ব্যাক্টেরিয়া ইত্যাদির জন্য একটি প্রধান ভিত্তি । তাই একটি অ্যাকোয়ারিয়ামে কমপক্ষে এই ইঞ্চি পুরু সাবস্ট্রেট খুব জরুরি।
(৪) কি ধরনের ফিল্টার লাগানো উচিত?
ফিল্টার অ্যাকোয়ারিয়ামের মেরুদন্ড। ভালো ফিল্টার না হলে কখনোই ভালো অ্যাকোয়ারিয়াম করা সম্ভব নয়। ফিল্টার একদিকে যেমন মাছের বর্জ্য পদার্থ পরিস্কার করে মেকানিক্যাল ফিল্ট্রেশন করে, তেমনি জৈব পদার্থ বিয়োজন করে বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশনেও সাহায্য করে। ফিল্টার মিডিয়ায় উপকারী ব্যাক্টেরিয়া সবচেয়ে বেশি বাসা বাঁধে যাঁরা অ্যাকোয়ারিয়ামের বর্জ্য বিয়োজনে মূখ্য ভূমিকা পালন করে। তাই অ্যাকোয়ারিয়ামে ফিল্টার কখনোই বন্ধ করা উচিত নয় । সাধারণত বাজারে ইন্ট্যারনাল ফিল্টার ( power filter, sponge filter, corner filter, bio-sponge filter) ও এক্টারনাল ফিল্টার (Top filter, Hang on back filter, Sump filter, Canister filter) এই দুই ধরনের ফিল্টার কিনতে পাওয়া যায়। অ্যাকোয়ারিয়ামের সাইজ, মাছের সংখ্যা, মাছের প্রকৃতি ইত্যাদি বিচার করে প্রয়োজন অনুযায়ী ফিল্টার লাগানো উচিত। যেসব মাছেরা স্রোত পছন্দ করে না তাদের ক্ষেত্রে কখনোই শক্তিশালী পাওয়ার হেড যুক্ত ফিল্টার লাগানো উচিত নয়।
(৫) অ্যাকোয়ারিয়ামে আলোর কি প্রয়োজন?
আলো ছাড়া যে কোন অ্যাকোয়ারিয়াম নিষ্প্রাণ। অ্যাকোয়ারিয়ামের সৌন্দর্য আলোর উপর অনেকাংশেই নির্ভর করে। তাছাও বহু মাছেদের অন্ধকারে রাখলে যেমন তাদের রং ধীরে ধীরে ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে, আবার অতি তীব্র আলোও মাছেদের স্ট্রেস জাতীয় নানান সমস্যা তৈরি করে। সাধারণ সাদা স্নিগ্ধ আলো মাছেদের ও অ্যাকোয়ারিয়ামের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে, মাছ ও গাছপালার বৃদ্ধি বিকাশে সহায়তা করে । তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন যারা অ্যাকোয়ারিয়ামের Advance লেভেলের গাছপালা রাখতে চান তাঁদের ক্ষেত্রে আলোর চাহিদা সম্পূর্ণ আলাদা। এই লেখায় সেই আলো নিয়ে আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক । তবুও যদি সাধারণ কিছু কষ্ট সহিষ্ণু গাছপালা অ্যাকোয়ারিয়ামে করতে চান, সেক্ষেত্রে বাজারে সামান্য বাজেটেই কিছু LED বাল্ব, টিউব, SMD জাতীয় ভালো আলো পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করে “দু-চারটে গাছ, কিছু মাছ” অবশ্যই করা যায়। তবে যে আলোই ব্যবহার করুন সাদা আলো ছাড়া অন্য কোন আলো সাধারণ অ্যাকোয়ারিয়ামে ব্যবহার করা উচিত নয়। বিশেষত লাল-নীল ডিস্কো আলো তো মোটেই নয়। এতে মাছের ক্ষতি ছাড়া লাভের কোন আশা নেই।
আজ এই পর্ব এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী পর্বে আরও অনেক জিজ্ঞাসার উত্তর নিয়ে হাজির হবো, ধন্যবাদ।

We are accepting the entries for IBAC

X