Basics of Malawi keeping – Part 2

fishkeeping simplified

Basics of Malawi keeping – Part 2

পর্ব- ২৷
নতুন মেছোদের জন্য সহজসরল ভাবে মাছ পোষার গাইডলাইন । মালাউই সিকলিড পোষাপুষি নিয়ে লেখালিখির আজ দ্বিতীয় পর্ব।
তাহলে আর দেরি কেন শুরু হোক দ্বিতীয় পর্ব …..
•• কতো বড় ট্যাঙ্ক চাই :
যতো বড় খুশি তত বড় হলে ভালো হয়, এতো বড় ট্যাঙ্ক করুন যাতে বাড়িতে লোকজন এলে অবাক হয়ে বলে “অ্যাত্তো বড় ট্যাঙ্ক”। কারন কোন কারনে মালাউইদের মারামারি শুরু হলে চৌবাচ্চার সাইজও কম পড়ে, তাই ছোটখাটো অ্যাকোয়ারিয়ামে মালাউই সিকলিড রাখার চিন্তা ভাবনা ভুলেও না। আসলে মালাউই সিকলিডরা ন্যানো, স্মল, মিডিয়াম কোন অ্যাকোয়ারিয়ামেরই মাছ না। জায়েন্ট বা মন্সটার অ্যাকোয়ারিয়ামই এদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত।
ধরুন একদল মবুনা আপনি রাখতে চান, (সে মেল অনলি আথবা ১০-১২ টার কলোনি যাই হোক না কেন) তাঁদের রাখতে হলে নূন্যতম চার ফুটের ট্যাঙ্ক চাই-ই। যেসব মবুনা তুলনায় শান্ত যেমন ইয়োলো ল্যাব, ইয়োলোটেল এসিই বা আকারে ছোট যেমন ধরুন সাউলোসি বা ডেমাসনিদের ক্ষেত্রে চার ফুটের ট্যাঙ্ক ভালোভাবেই হয়ে যায়। কিন্তু যদি আপনার সায়ানোতিলাপিয়া, মেইল্যান্ডিয়া, আরাটাস গোত্রের প্রচন্ড অ্যাগ্রেসিভ মমবুনাদের পোষার ইচ্ছা হয় সে ক্ষেত্রে চার ফুটের ট্যাঙ্কও ছোট মনে হতে পারে। প্রথমত এই ধরনের মাছগুলো আকারে সাধারণ মবুনাদের তুলনায় বেশ বড় , এবং এদের শক্তিশালী চোয়াল এবং দাঁত থাকে। যার সাহায্যে অ্যাকোয়ারিয়ামের একটা বড় জায়গা ডমিন্যান্ট মেল একাই দখল করে রাখে। বাদবাকি মাছেদের এক কোনায় ঠেলে দেয় এবং ক্রমাগতভাবে মারতে থাকে। এতে কোনঠাসা মাছগুলো সারাক্ষণ স্ট্রেসে থাকে, রং দেখানো তো দূরের কথা, খাবার-দাবার ঠিকমতো খেতে পায় না, গ্রোথ হয় না, নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে র্যাঙ্ক-অর্ডারে শেষের দিকে থাকা মাছগুলো একটা একটা করে মরতে থাকে । এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকেই মনে করেন মাছের সংখ্যা বাড়িয়ে দিলেই হয়তো অ্যাগ্রেসনের সমস্যা কমে যাবে। এর পেছনে জনসংখ্যার ঘনত্ব বাড়িয়ে দিলে ইন্ডিভিজুয়াল অ্যাগ্রেসন কমে যায় বলে যে ধারণা আছে তা কিন্তু মোটেও কোন সঠিক ধারণা নয়। কারণ আপনি সংখ্যা যতোই বাড়িয়ে দিন না কেন ট্যাঙ্ক ছোট হলে ডমিনেন্ট মেল টপ টু বটম সব্বাইকে ধরে ধরে মারবে। ডমিনেন্ট কে সরালে আবার যে ডমিনেন্ট হবে সেও একই ভাবে মারবে। এইভাবে চলতেই থাকবে যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি জনসংখ্যার অনুপাতে বড় ট্যাঙ্ক দিচ্ছেন যেখানে প্রতিটি মাছ নিজেদের নিজেদের টেরিটোরি নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে বা কেউ আক্রমণ করলে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে ।
তাছাড়া বেয়ার বটম ট্যাঙ্ক এবং জল পরিবর্তন করলে অ্যাগ্রেসন কমে যাবে বলে অনেকেই টোটকা দিয়ে থাকে, বাস্তবে এগুলো করে খুব একটা সুবিধা হয় না। উল্টে এতে ট্যাঙ্ক ব্যালেন্স নষ্ট হয়। অতএব এতো কথা বলার একটাই কারণ সেটা হচ্ছে “ট্যাঙ্ক বড় করুন” ।
একটা কলোনি/১০-১২ টা মাছের ক্ষেত্রে মোটামুটিভাবে নূন্যতম ট্যাঙ্কের হিসাব এরকম –
ক) মোটামুটি ছোট পিসফুল মবুনাদের ক্ষেত্রে ৪×১.৫×১.৫ ফুট
খ) অ্যাগ্রেসিভ মবুনাদের ক্ষেত্রে ৫×১.৫×১.৫ ফুট
গ) পিককের ক্ষেত্রে ৫×১.৫×২ ফুট
ঘ) ছোট হ্যাপদের ক্ষেত্রে ৬×২×২ ফুট
ঙ) প্রিডেটর হ্যাপদের ক্ষেত্রে ৮×৩×৩ ফুট
•• জলের অবস্থা :
মালাউই হার্ড ওয়াটারের মাছ, পাতি কথায় এরা আপনার কলের জলে বেশি ভালো থাকবে, যদি জলটাকে একটু পুরোনো করে নিতে পারেন। আয়রন-আর্সেনিকের সমস্যা না থাকলে সেই জল ভালোভাবেই ব্যবহার করা যায় । মালাউই সিকলিডদের পছন্দের জলে pH ৭.৫-৮, টিডিএস ৭৫০-৮০০ এবং তাপমাত্রা ২৫-৩০° সেঃ -এর কাছাকাছি থাকে , সেই অনুযায়ী জল তৈরি করলেই হলো । গরমকালে এদের যেমন সমস্যা হয় না, শীতকালেও খুব ঠান্ডা না পড়লে এরা সহজে ঝিমিয়ে পড়ে না। তবে আমার ব্যক্তিগত মতে সম্ভব হলেহিটার দেওয়া অবশ্যই ভালো। এতে রোগবালাই এর রিস্ক যেমন কমে, ট্যাঙ্ক ব্যালেন্স ধরে রাখতেও সুবিধা হয়।
•• ফিল্ট্রেশন :
আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী Most important factor of any Malawi cichlid tank, এই একটা ফ্যক্টরের উপর নির্ভর করবে আপনার ট্যাঙ্ক দাঁড়াবে কি দাঁড়াবে না। মনে রাখতে হবে মালাউই মানে বিশাল সাইজের ট্যাঙ্ক। বিপুল পরিমাণ জল। মাছের ঘনত্ব যথেষ্ট বেশি। মাছ খায় বেশি, ছড়ায় বেশি এবং নোংরা করে বেশি। অথচ থাকতে পছন্দ করে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার জলে, সামান্য অ্যামোনিয়া-নাইট্রেট সহ্য করতে পারে না । অতএব With great tank comes great filtration system, মবুনাদের ক্ষেত্রে তুলনায় ছোট ট্যাঙ্কে ক্যানিস্তারে কাজ চলে যাবে, কিন্তু পিকক বা হ্যাপ হলেই সাম্প বেস্ট অপশন। ব্যাক্তিগতভাবে অনেককেই ওভারহেড সাম্প ব্যবহার করতে দেখেছি। সাবমার্সিবল পাম্পের সাথে সাথে ট্যাঙ্কের ওয়েভ মেকার লাগিয়ে ডেড স্পট কভার করতে দেখেছি, সেটাও খুব একটা মন্দ অপশন নয় বটে তবে শুধু স্পঞ্জ বা টপ ফিল্টারের ভরসায় মালাউই না করাই ভালো। বড় ট্যাঙ্কের দুদিক দিয়ে দুটো টপ কিংবা একটা বড় IPF দিয়ে কাজ চালানোর কথা ভুলেও ভাববেন না, ওসব অ্যাডিশনাল ফিল্ট্রেশন হিসেবে অ্যাড করা যেতেই পারে কিন্তু মেইন ফিল্ট্রেশন সাম্প বা ক্যানিস্তারে মতো ফিল্ট্রেশন ছাড়া হবে না। মনে রাখবেন অ্যামোনিয়া নাইট্রেট বিহীন স্বচ্ছ পরিস্কার জল ছাড়া কখনোই মালাউই মাছেদের কাঙ্ক্ষিত রং পাবেন না। তাই মেক্যানিক্যাল ফিল্ট্রেশনের পাশাপাশি বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশনেও গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। দরকারে টেস্ট কিট ব্যবহার করে নিয়মিত জলের প্যারামিটার চেক করুন, সপ্তাহ একদিন ২৫-৩০% জল সাইফন করে ফেলে নতুন জল দিন তবুও ভালো।
•• খাবার-দাবার : আফ্রিকান সিকলিডদের একটা কমন বৈশিষ্ট্য এরা খাবার নিয়ে খুব একটা ঝামেলা করে না, খাবার দিলেই সোনামুখ করে খায়। মালাউইরাও এর ব্যাতিক্রম নয়। আপনি ট্যাঙ্কের কাছে গেলেই খাবার চেয়ে তুমুল লাফালাফি শুরু করে দেয়। তবে আদর করে একদম বেশি খাওয়াবেন না কিন্তু, প্যালেট, ফ্রোজেন, ফ্লেক যাই দিন না কেন দিনে দুবারের বেশি দেবেন না, এবং এমন পরিমানে দেবেন যাতে পাঁচ মিনিটের মধ্যে খাবার শেষ করতে পারে। এর সাথে সাথে আবার পেট যেন ভরে যায় সেদিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। যেহেতু সারাদিন এরা ছোটাছুটি করে এবং ডমিনেন্ট মাছেরা খাবার সময়তেও সাবডমিনেন্টদের তাড়া করে বেড়ায় তাই অ্যাকোয়ারিয়ামের প্রতিটি মাছ সমানভাবে খেতে পাচ্ছে কি না সেটাও খেয়াল রাখা জরুরি। সবচেয়ে ভালো হয় খাবার দেওয়ার পাঁচ মিনিট আগে থেকে খাবার শেষ করার পাঁচ মিনিট পর পর্যন্ত অ্যাকোয়ারিয়ামের সামনে বসুন, এতে ওদের সোস্যাল বিহেভিয়ার যেমন বুঝতে পারবেন তেমনি কোন মাছ অসুস্থ কিনা, কেউ মার খাচ্ছে কি না, সঠিকভাবে সবাই খেতে পাচ্ছে কি না এগুলোও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। এতে শুধু পুষ্টির দিকটি নয় সামগ্রিক ভাবে আপনার অ্যাকোয়ারিয়াম ভালো থাকবে। তবে একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন মবুনারা শাকাহারী, পিকক এবং হ্যাপেরা মাংশাসী তাই এদের একসাথে না পোষাই যেমন ভালো তেমনি এক ধরনের খাবারও না দেওয়াই ভালো। বাজারে যে সব ব্রান্ডেড হার্বিভোর ফুড পাওয়া যায় সেগুলো মবুনাদের জন্য ব্যবহার করতে পারেন, পিকক এবং হ্যাপদের জন্য কার্নিভোর প্যালেট খুব সহজলভ্য। চাইলে আপনি বাড়িতেও খাবার তৈরি করতে পারেন, সেক্ষেত্রে অর্থ যেমন সাশ্রয় হয় তেমনি নিজের মাছের চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টির মাত্রাও নির্ধারণ করা যায়।
পরিশেষে একটা কথা না বললেই নয় অনেকের মধ্যেই মবুনাদের কেঁচো খাওয়ানোর প্রবণতা আছে। এটি একটি বিপজ্জনক পদ্ধতি। কেঁচো দিলে মবুনারা খেয়ে নেয় ঠিকই তবে এদের দেহে ওই খাদ্য সঠিকভাবে পরিপাক হয় না, ফলে বারবার কেঁচো খাওয়ালেই অচিরেই হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পটকাফোলার মতো রোগে আক্রান্ত হয়ে করুনভাবে মারা যায়। তাই মবুনাদের কেঁচো খাওয়ানো থেকে একেবারেই বিরত থাকা উচিত। চাইলে ওদের লেটুস দিন, পালংশাক দিন, মটরশুঁটি দিন কিন্তু হাই-প্রানীজ প্রোটিন যুক্ত কোন খাবার নৈব নৈব চ । মনে রাখবেন ভালো কোয়ালিটির খাবারও মাছেদের রং আসা এবং রং ধরে রাখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই যথোপযুক্ত খাবারের ব্যবস্থা ছাড়া মালাউই মাছেদের পোষা একদমই অনুচিত।
যাইহোক দ্বিতীয় পর্ব এখানেই শেষ করছি, খুব শীঘ্রই দেখা হবে পরের পর্বে। ধন্যবাদ।

 

We are accepting the entries for IBAC

X