Hypsophrys nicaraguensis

fishkeeping simplified

Hypsophrys nicaraguensis

মধ্য আমেরিকার মোটামুটি সমস্ত সিকলিড গ্রুপের মাছেরাই তাদের বর্নাঢ্য শরীরের জন্য পরিচিত। কিন্তু তাদের মধ্যে সত্যিকারের রূপের ও বর্ণের শোভার জন্য শ্রেষ্ঠতম স্থানে যদি কাউকে বসানো যায় তাহলে আমার মতে সেটি আজকের #thursday_species_highlight এর প্রজাতিটি, Hypsophrys nicaraguensis যারা আমাদের আকোরিয়াম হবিতে Macaw cichlid নামে পরিচিত। এছাড়াও এদের আরো বেশ কিছু নামে ডাকা হয় , যেমন butterfly cichlid, Spilotum, Moga Cichlid ইত্যাদি ইত্যাদি। খেয়াল করে দেখবেন এই প্রত্যেক টি নামই এদের রূপের ছটা কেই ইঙ্গিত করে।

মধ্য আমেরিকার আটলান্টিক স্লোপ বরাবর সান যুয়ান (San juan drainage) থেকে কোস্টারিকার মাটিনা (Matina river drainage) অব্দি মোটামুটি ছোট বড় জলরাশি, নদী, হ্রদের ধীরগতির স্রোত এদের বিচরণক্ষেত্র। যার মধ্যে লেক নিকারাগুয়া Macaw দের একটা বড় বাসস্থান। 1864 খ্রিস্টাব্দে গিন্থার (Gynther) প্রথম প্রজাতিটি চিহ্নিত করেন। যদিও শুরুর দিকে নিকারাগুয়া সিকলিড এর স্থান হয়েছিল Cichlasoma genus পরবর্তী কালে তা পরিবর্তন করে এদের Hypsophrys genus এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

নিকারাগুয়া সিকলিড আকারের দিক থেকে যথেষ্ঠ বড় এক প্রজাতি। পরিণত অবস্থায় পুরুষ নিকারাগুয়া 10 ইঞ্চি অব্দি আকার নিতে পারে যদিও স্ত্রী রা আকারে কিছু ছোটই (8 ইঞ্চি) হয়। মুগুরের মতো শরীরের গঠন এদের, যেখানে মাথার সামনের দিকটা বেশ বাঁকানো। মুখগহ্বর অবস্থান করে মুখের নিচের দিকে, ঠিক কিছুটা ট্রফিয়াসদের মতো। এবার আসি রঙের বাহারে। মোটামুটি ভাবে ইন্দ্রোধণুর সব রঙই বোধ হয় এদের শরীরে দেখতে পাওয়া যায়। মুখের দিকটা নীলাভ সবুজ দিয়ে শুরু হয়, তারপর যতই পেছনের দিকে যাওয়া হয়, শরীরের ওপর সোনালী হলুদ রঙের সাথে তামাটে লাল রঙের একটা খেলা দেখতে পাওয়া যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শরীরের ঠিক মাঝ বরাবর একটা কালো দাগ দেখতে পাওয়া যায় (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্ত্রীদের এটা স্পষ্ট বোঝা যায়) । স্ত্রী মাছেরা তুলনামূলক ভাবে পুরুষ দের থেকে অনেক বেশি সুন্দর হয়। এটাও পুরুষ, স্ত্রী চিহ্নিতকরণের একটা দিক হিসেবে দেখা যেতে পারে। পরিণত নিকারাগুয়া পুরুষমাছের মাথায় একটা ‘ হাম্প’ দেখতে পাওয়া যায়।

নিকারাগুয়া সিকলিড খুব একটা মেজাজী হয়না অন্য মধ্য আমেরিকানদের মতো যদিও প্রজনন কালে সেই আচরণের একটু তারতম্য ঘটিয়ে এরা উগ্র হয়ে ওঠে। তবুও এদের শান্ত স্বভাবের মাছ বললেই চলে। তাই যদি স্পিসিস ট্যাংক বানানো যায় খুব ভালো হয়। যদি কমিউনিটিতে রাখতেই হয় তো খেয়াল রাখতে হবে যেন এদের সঙ্গী সাথীরাও একটু শান্ত মেজাজী হয়। যেহেতু এরা পরিণত অবস্থায় 10 ইঞ্চির কাছাকাছি পৌঁছে যায় তাই এক জোড়া রাখার জন্য সর্বনিম্ন 4 ফুট (যদি পরিণত অব্দি রাখতে চান) একোরিয়াম বাধ্যতামূলক। সাবস্ট্রেট হিসেবে খুব মসৃন বালি ব্যবহার করতে পারেন। তার সাথে কিছু ড্রিফ্ট উড ও পাথর দিয়ে খুব করে লুকোনোর জায়গা তৈরি করতে পারেন। কোনো রকম জলজ গাছপালা না ব্যবহার করাই ভালো কারণ নিকারাগুয়াদের খোঁড়া স্বভাব, তাই সেসব বেশিদিন ট্যাংক এ থাকার আশা কম।

জলের রসায়ন মোটামুটি নিম্নরূপ তাপমাত্রা : 23C – 28C,pH : 7-8,হার্ডনেস : 8 -20dgH

এবার আসি খাওন দাওন এর বিষয়ে। নিকারাগুয়া উদ্ভিদজ ও প্রাণীজ দুইরকম খাবার খেতেই পটু। প্রকৃতিতে এরা বিভিন্ন ফলের বীজ, জলজ গাছের পাতা, ছোট্ট অমেরুদন্ডী প্রাণী সবকিছুই খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। একোরিয়াম এ এদের আপনি প্যালেট খাবার, ফ্লেক ফুড, ফ্রোজেন ফুড এসব কিছুই খাওয়াতে পারেন। ডায়েট এ মাঝে মাঝে bloodworm ও earth worm রাখা যেতে পারে তবে তা যেন নিয়মিত না হয়।

নিকারাগুয়া egg layer স্পিসিস অর্থাৎ এরা কোনো স্থানে ডিম পাড়ে। এদের প্রাকৃতিক অবাসস্থলে এরা নদী বা হ্রদের পাড়ে গর্ত খুঁড়ে বাসা করে ডিম পাড়ে যদিও একোরিয়াম এর মধ্যে সেসবের প্রয়োজন হয়না। এদের cave spawner ও বলা যেতে পারে, যদিও অন্যান্য cave spawner দের থেকে এরা একটু আলাদা। নিকারাগুয়া কোনো গুহার দেওয়ালে ডিম পাড়তে পারেনা কেননা এদের ডিমে আঠালো ভাব টা নেই অন্যান্যদের মতো। তার পরিবর্তে এরা গুহার মধ্যে গর্ত করে সেখানে গুচ্ছ ভাবে ডিম পাড়ে। একোরিয়ামের মধ্যে মাটির টব, কাঠ এসব দিয়ে cave formation বানানো যেতে পারে। স্ত্রী মাছটি একেবারে 300 থেকে 400 টি ডিম পাড়তে পারে। সাধারণত ডিম পাড়ার 3 দিন পর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। বাচ্চার পাহারা দেওয়া ও প্রতিপালন করা পুরুষ ও স্ত্রী উভয়েই খুব দায়িত্ব সহকারে পালন করে।

We are accepting the entries for IBAC

X