Swim bladder disorder

fishkeeping simplified

Swim bladder disorder

(পটকা ফোলা রোগ) : কারণ ও প্রতিকার

অ্যাকোয়ারিয়ামে কখনো কখনো আমরা কোন কোন মাছকে পেট ফুলে উল্টো হয়ে ভাসতে দেখি, মাছটি যেন অনেক চেষ্টা করেও জলের নিচে নামতে পারছে না, ঠিকঠাক সাঁতার কাটতে পারছে না, মনে হচ্ছে যেন খুব কষ্ট করে নীচে নামার চেষ্টা করেছে, পেটের নিচটা লালচে দাগ দাগ হয়ে গেছে। অথবা অ্যাকোয়ারিয়ামের নীচে চুপচাপ বসে আছে, উপরে উঠতে পারছে না, খেতে চেষ্টা করছে কিন্তু ভালোভাবে খেতে পারছে না, ঠিক ধরেছেন, এটা মাছের একটা সমস্যা একেই Swim bladder disorder বা পটকা ফোলা সমস্যা বলে। সুইম ব্লাডার কোন একটি নির্দিষ্ট রোগ নয়, বরং অনেকগুলি রোগের একটি কমন উপসর্গ । তাই দুম করে এই-এই করলে সুইম ব্লাডার সেরে গিয়ে মাছ আবার ভালো হয়ে যাবে একথা বলা যায় না। তাই চলুন আগে জেনে নিই কি কি কারণে এই রোগ হয় …
#কারণ:
১) Poor water quality :
গোল্ডফিশের মতো হাইব্রিড মাছের ক্ষেত্রে জলের কোয়ালিটি একটা খুব বড় factor, সাধারণত জলের pH 7, TDS <150 এদের জন্য খুবই জরুরি। এছাড়াও গোল্ডফিশের মত মাছ যারা প্রচুর বর্জ্য পদার্থ উৎপাদন করে তাদের ক্ষেত্রে অতি ভালো ফিল্ট্রেশন (12-15X) এবং সঠিক বায়োলোড (120-150L প্রতি গোল্ডফিশ) মেনটেন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । ব্যালেন্স ট্যাঙ্ক তৈরি, নিয়মিত অ্যামোনিয়া-নাইট্রেট কনট্রোল, সপ্তাহে দুবার অন্ততঃ মেজর ওয়াটার চেঞ্জ ইত্যাদি খুব দরকারী। এর অন্যথা হলেই up side down হয়ে যাওয়া খুব কমন ব্যপার।
২) Poor feeding :
গোল্ডফিশ খেতে ভালোবাসে বলে তাকে হদ্দমুদ্দ খাওয়ানো, ভুলভাল জিনিস খাওয়ানো, ভুলভাল পদ্ধতিতে খাবার খাওয়ানো ইত্যাদিও Swim bladder disorder এর একটা মস্ত বড় কারণ। এগুলোর সবকটার একটাই ফলাফল, হজমের গোলমাল । গোল্ডফিশের digestive system খুব খারাপ, এবং ভেজিটেবল ফুড ছাড়া প্রোটিন বেসড ফুড কখনই এদের জন্য নয়। প্রোটিন ঠিকঠাক হজম করতে না পারলেই পটকা ফোলা নিশ্চিত। এছাড়াও ভাসমান খাবারের সাথে গিলে ফেলা বাতাসও এদের জন্য Lethal, তাই vegetable based sinking food ছাড়া অন্য কিছু খাওয়ানো মানেই Swim bladder কে নিমন্ত্রণ করে ডেকে আনা।
৩) Sudden temperature drop :
জলের উষ্ণতার উপর জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন ও মাছের খাদ্যের হজমের প্রক্রিয়া নির্ভরশীল। হঠাৎ করে তাপমাত্রা কমে গেলে মাছের খাদ্য হজমের প্রক্রিয়া ব্যহত হয় ও অবিয়োজিত খাদ্যবস্তু শরীরের ভিতরে Swim bladder সহ নানান সমস্যা তৈরি করে।
৪) জন্মগত ত্রুটি(Balloon fish), কিডনিতে পাথর, লিভারে ফ্যাট জমা হওয়া এমনকি স্ত্রী মাছের পেটে ডিম এলেও মাছের দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সাইজে বেড়ে কমে যেতে পারে, ফলে পটকার উপর চাপ কমে/বেড়ে যাওয়ায় ফলে মাছ তার ব্যালেন্স হারায় এবং Swim bladder disorder এর কবলে পড়ে। এছাড়াও মাছের পৌষ্টিকতন্ত্রে ব্যাক্টেরিয়া, প্যারাসাইটের আক্রমণ ইত্যাদি নানা কারণে swim bladder disorder হতে পারে।
#প্রতিকার :
Prevention is better than cure এই প্রবাদটি এই রোগের চিকিৎসার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। অর্থাৎ এই রোগ ধরে গেলে সারানো যতটা কঠিন তারচেয়ে রোগ হতে না দেওয়া অনেক সোজা।
তাহলে এইরোগ আটকাতে গেলে কি করতে হবে?
সহজ কথায় ট্যাঙ্ক স্টেবল করতে হবে, Water parameters fall করতে দিলে চলবে না । ল্যাদ খেয়ে জল পাল্টাবো না একথা বললে চলবে না। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন দূষিত পদার্থ মুক্ত অ্যাকোয়ারিয়ামে মাছের swim bladder disorder হওয়ার সম্ভাবনা কম । তবুও যদি হয়ে যায় তখন কি করবেন?
অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, প্রথম দিকে রোগ নির্ণয় যদি করা যায় তবে সুইম ব্লাডার ডিসঅর্ডার সহজে সারানো গেলেও রোগের শেষ পর্যায়ে সার্জারি ছাড়া সারানো কঠিন হয়ে পড়ে। যাইহোক কি কারণে swim bladder disease হয়েছে সেটা যদি নির্নয় করা যায় তবে রোগের চিকিৎসা অনেক সহজ হয়ে যায় । যদি দেখা যায় digestive কারণে swim bladder disorder হয়েছে সেক্ষেত্রে রোগ সারানো সহজ। প্রথমেই মাছটিকে একটি আলাদা পাত্রে রেখে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। ঐ পাত্রে চিকিৎসার উপযোগী জল আগে থেকেই মজুদ রাখতে হবে। মাছটিকে 2-3 দিন খাবার দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হবে, জলের উচ্চতা কমিয়ে মাছের উচ্চতার চেয়ে দুই ইঞ্চি বেশি রাখতে হবে, জলের তাপমাত্রা 26-30°C করে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে জলের স্রোত যেন বেশি থাকে। অক্সিজেনের ঘাটতি হতে দিলে চলবে না। তিনদিন পর সিদ্ধ মটরশুঁটির খোসা ছাড়িয়ে অল্প অল্প করে খাওয়াতে হবে। মটরশুঁটির দানার ফাইবার গোল্ডফিশের পাচনতন্ত্র পরিস্কার করে মাছটিকে রোগমুক্ত করতে সাহায্য করে । এছাড়াও প্রতি 4-5 লিটার জলে 1 চা চামচ এপসম লবণ/ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (MgSO4) গুলে সেই জলে রোগ আক্রান্ত মাছটিকে কিছুক্ষণ ছেড়ে সল্ট ওয়াটার বাথ দিলে উপকার পাওয়া যায়। এমসম সল্টের মধ্যে থাকা Saline laxative পরজীবী ঘটিত সুইম ব্লাডারের ক্ষেত্রে পরজীবীকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে তেমনি, হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। তবে এসবের পরেও যদি না সারে এবং সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়, সেক্ষেত্রে অন্যাস্থেসিয়া দিয়ে মাছকে সার্জারি টেবিলের তলাতেই আনা ভালো, নিজে ডাক্তার না হয়ে একজন দক্ষ মৎস চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উচিত । ধন্যবাদ।

 

We are accepting the entries for IBAC

X