Betta mahachaiensis

fishkeeping simplified

Betta mahachaiensis

কয়েকদিন আগে একটা খবরের কাগজে প্যারিস ভ্রমণ নিয়ে একটা প্রতিবেদন পড়ছিলাম।কী কী দেখার আছে,কীভাবে যেতে হয়,খরচ খরচা কেমন ইত্যাদি।লেখক যথাসাধ্য খেটে তথ্যসংগ্রহ করে প্রতিবেদন টা লিখেছেন এবং সেটা পড়ে আপনার প্যারিসভ্রমণের সুবিধাও হয়ত হবে,কিন্তু, শংকরের ভ্রমণকাহিনীর স্বাদ বা দেশ দেখার চোখ ওতে পাবেন না।মাছ নিয়ে আমার লেখা ওই প্রতিবেদনগুলোর মতো।বেট্টা মাছের জন্য যারা ২-৪ টে অ্যাকোয়িরাম উৎসর্গ করেছেন,মহাচাইয়েনসিস কে ভালো না বেসে তারা পারবেন না।বন্য এবং হাইব্রিড,দু রকম ভাবেই একে ভারতে পাওয়া যায়।একেবারে বন্য নিতে গেলে একটু বেশি দাম পড়বে(১০০০-এর বেশি),হাইব্রিডের দাম একটু কম।শো আর পেট গ্রেড অনুসারে দাম পরিবর্তিত হয়।আশেপাশের অঞ্চলের মাছ- পালনকারী মানুষের কাছে কখনও সখনও কম দক্ষিণায় পেয়ে যেতে পারেন ভারতে জন্মানো মহাচাই বাচ্চা।আজকাল বিভিন্ন ফার্মে প্রচুর হাইব্রিড তৈরি করা হচ্ছে,তাদের রং,পাখনার বিন্যাস বিভিন্ন।ব্যক্তিগতভাবে আমি একটি হাইব্রিড নীল,পানপাতাকৃতি লেজযুক্ত মহাচাই- এর সেবিকা ছিলাম।মাছ টা অদ্ভুত সুন্দর দেখতে।বন্য প্রজাতিটার রং কালচে বাদামী পটে চিত্রাভ নীলচে সবুজ।পাখনায় সুন্দর রশ্মিজাল( rays)।মাথায় ঘন বাদামি বা কালো রং।চোখ চিত্রাভ নীলচে সবুজ। দেখলে মনে হবে,জ্যামিতিকভাবে নিখুঁত করে কে যেন সব রংগুলোকে সাজিয়ে দিয়ে গিয়েছে।৩.৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে ছেলে রা।মেয়ে রা একটু খাটো।বন্যজগতের নিয়ম মেনে ছেলে রা দেখতে বেশি রঙিন আর বাহারি।বন্য মহাচাই মেয়ের গাত্রবর্ণে হলুদ আর হালকা বাদামি আভা।পাখনা ঈষৎ ফ্যাকাসে চিত্রাভ নীলচে সবুজ।মহাচাই প্রজাতির প্রাকৃতিক বাসস্হান হল নিপা পাম গাছে ঘেরা কিঞ্চিৎ লবণাক্ত ( ভাষান্তরে ব্র্যাকিশ,সাবধান,’ব্ল্যাকিশ’ নয় কিম্তু)খাঁড়ির জলাভূমি।পামগাছের শিকড়বাকড়ের ফাঁকে ছেলে রা সুরক্ষিতভাবে বুদবুদ তৈরি করে,আর প্রজননের সময় ডিম জমা করে।জলের পি এইচ থাকা উচিত ৬.৮-৭.৮,লবণতা ১.১-১০.৬ পি পি টি( ppt- parts per thousand)।সুতরাং এদেরকে খাসা রাখতে গেলে এইরকম বাড়িঘরদোরের ব্যবস্হা করতে হবে। মহাচাই রা এমনিতে আমাদের আদরের স্প্লেনডেন দের মতো ফাইটার নয়।তবুও,একসাথে দুজন ছেলে রাখা চাপের হতে পারে।সবচেয়ে ভালো,ছেলেমেয়ে জোড়ে রাখা।একটাই জোড়।সাথে অন্য প্রজাতি রাখলে মহাচাই দম্পতি বংশবিস্তার করতে অস্বীকার করতে পারে।দেড় ফুট বাই এক ফুট ঘেড়াটোপে দিব্যি থাকবে।আমার একটা ছিল এক বর্গফুট বাক্সে।একটু জাভা ফার্ণ দিলেন,সাথে জাভা মস।ঈষৎ লবণাক্ত( ব্র্যাকিশ) সেট আপ কিন্তু এদের পক্ষে আদর্শ।তবে,সাধারণ প্ল্যান্টেড বা হালকা কালো জলেও এরা থাকে না যে তা নয়,কিন্তু,সবসময়ই ভৌগোলিক দিক থেকে সঠিক পরিবেশ দেওয়াই মাছের পক্ষে ভালো।লুকনোর জায়গা দিতে হবে।এরা বীভৎস লাফায়।জলের উপরে ভাসমান গাছ দিয়েই স্বস্তিতে থাকবেন না,জাল দেওয়াই ভালো।জলের উষ্ণতা ৭৫-৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট রাখা উচিত।জলের রসায়ণ,মানসিক উদ্বেগ ইত্যাদি এদের গাত্রবর্ণকে যারপরনাই প্রভাবিত হয়।আচ্ছা,এরা যে শুকনো খাবার খাবেই তার কোন মানে নেই।মাংসাশি মাছ,পোকামাকড় ধরে খায়।ব্লাডওয়ার্ম,কেঁচো খাওয়ান।মহাচাই মন্থর জলে থাকতে অভ্যস্ত।স্পঞ্জ ফিল্টার ছাড়া ভালো বিকল্প পাচ্ছি না।ফিল্টার ছাড়া মহাচাই রেখে কেউ সাফল্য পেয়েছেন কিনা,কমেন্টে আলোচনা করা যেতে পারে।তাহলে আর কি,একজোড়া এনে ফেলুন,খরচাপাতি বিফলে যাবে না,গ্যারান্টি

আচ্ছা,শেষ পাতে একটা জিজ্ঞাসা,মহাচাইয়েনসিস-এর নাম মহাচাইয়েনসিস হল কেন বলুন তো?

We are accepting the entries for IBAC

X