Jurassic fish – Part 2 -Freestyling Sharks

fishkeeping simplified

Jurassic fish – Part 2 -Freestyling Sharks

হাঙরের রকমফের

হাঙরের কথা কে না জানি? মোহনার কামঠ থেকে আরব সাগর এর Tiger Shark, এরা সবাই হাঙর গোত্রের প্রাণী। ছোটবেলা থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে হাঙরদের সাথে আমাদের পরিচয়। কারুর পরিচয় সুন্দরবন এর মানুষ এর মুখে গল্প শুনে, আবার কারুর হাঙর চেনা Spielberg এর Jaws দেখে, বা Discovery Channel এর Shark Week দেখে। এদের আত্মীয় শঙ্কর মাছেদের জন্যে আমাদের প্লেটে ও পেটে বিশেষ স্থান আছে। যে ভাবেই পরিচয় হোক না কেন, হাঙরের মতন বিস্ময়কর মাছ সচরাচর দেখা যায় না।

হাঙর, শঙ্কর মাছ ও তাদের নানা আকৃতির আত্মীয়রা Chondrichthyes বর্গের(Class) মাছ। এদের সবচেয়ে স্পষ্ট বৈশিষ্ট্য গুলি হল, ঢাকাহীন কানকো, অস্থির বদলে কোমলস্থি , এবং দন্ত সাদৃশ্য আঁশ। এদের আবির্ভাব ৪৩ কোটি বছর আগে। প্রাচীন কালে, যখন ডাঙাতে কোন মেরুদণ্ডী প্রাণী পা রাখেনি, তখন মাছেদের ‘গো এজ ইয়ু লাইক’ প্রতিযোগিতা চলছিল। তখনও অস্থিযুক্ত মাছেদের কবলে পরেনি জলাশয়। এই সুযোগ কে ব্যবহার করে হাঙরের আত্মীয় স্বজন ছড়িয়ে গেল সর্বত্র।হাঙর এর বিবর্তনের শুরুর দিকে তাদের প্রধান প্রতিযোগিতা ছিল পাতচামড়া বা Placoderm মাছেদের সাথে। Placoderms দের বিলুপ্তির সময়ে হাঙররা এতই ছড়িয়ে গেল যে ৩৫ কোটি বছর আগে থেকে শুরু হয়েছিল হাঙর দের স্বর্ণযুগ। আমরা যারা বিবর্তন নিয়ে উৎসাহী, তারাও এই স্বর্ণযুগ কে উপেক্ষা করে যাই,যেহেতু ৩৭ কোটি বছর আগেই ডাঙায় আবির্ভাব হয়েছে উভচরদের। অথচ তখন সমুদ্রে চলছে বিবর্তন এর আরেক খেল, যেখানে আমাদের স্বপ্নাতীত আকার নিয়েছিল হাঙরের আত্মীয়রা।

এমনই এক মাছ Stethacanthus। আকারে ছোট এই bottom dwellers দের বাহ্যিকভাবে হাঙরদের মতন দেখতে হলেও এদের হাঙ্গরের এক আত্মীয় Ratfish বা কাইমেরা(Chimaera) দের সাথে বেশি মিল ছিল। পৃথিবীতে খুব কম মাছই আছে যাদের পিঠের পাখনার এমন বহর। বর্তমান এমন কোন মাছ নেই যার পিঠের পাখনা এরকম আকারের। পিঠে দুটো পাখনা, অনেকটা বর্তমানের Ratfish দের মতন। প্রথম পাখনার আকার ছিল উদ্ভট। ত্রিকোণ আকৃতির পাখনার বদলে এদের পিঠে থাকতো জুতো পরিষ্কার করার বুরুশের মতন একটি অংশ। এরা আকার ছোট মাছ, ৭০ সে.মি. লম্বা। অর্থাৎ আজ বেঁচে থাকলে এদের খুব বড় জায়গাতে রাখা যেত, যদি না এরা পরিযায়ী হত। পিঠের পাখনার বহর দেখে বিজ্ঞানীদের মত, এরা ছিল ধীরগতির মাছ। এদের বুকের পাখনাও সাধারণ ছিল না। এক জোড়া পাখনার সাথে ছিল এক জোড়া pectoral whip, দুটি লম্বা চাবুকের মতন অঙ্গ। এদের পাখনার উদ্ভট বহরের কারণের স্পষ্ট ব্যাখ্যা বার করা কঠিন হলেও, অনেক বিজ্ঞানীদের মতে এই পাখনার ব্যবহার করে প্রজননের সঙ্গী খুঁজত এই মাছেরা। শুধুমাত্র পুরুষদের পিঠে এই পাখনা দেখা যেত। এই পাখনা আত্মরক্ষার কাজেও লাগতো বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান। আনুমানিক ২৭ কোটি বছর আগে এই মাছের বিলুপ্তি হয়।

২৯ কোটি বছর আগে আরেক ধরনের হাঙর জাতীয় মাছের আবির্ভাব হয়। এদেরও সাদৃশ্য Ratfishদের সাথে, এবং এদের বর্তমান আত্মীয় বলতে শুধু Ratfishরাই আছে। তবে Stethacanthus এর মতন এদের পাখনার বহর ছিল না। এদের মুখ ছিল অনেকটা Circular Saw(গোলাকার করাত) এর মতন। Stethacanthus এর মতন এরা আকারে ছোট ছিল না। এদের মধ্যে বৃহত্তম মাছেরা ৩৩ ফিট লম্বা হতো। প্রথম যখন এদের জীবাশ্ম পাওয়া গেছিল, তখন এই Circular Sawএর ন্যায় বস্তুর অবস্থান জানা ছিল না। নানা গবেষকের নানা মত ছিল। কেউ কেউ বলেছেন, এটি পিঠের পাখনা, আবার কেউ বলেছেন উপরের চোয়ালে এর অবস্থান। অবশেষে এর এক জাতভাই Ornithoprion এর জীবাশ্ম আবিষ্কারের পর বোঝা যায় যে এই Circular Sawটি ছিল নিচের চোয়ালে অবস্থিত। আরেকটা অবাক করা বৈশিষ্ট্য এদেরকে বর্তমান এর হাঙর এর থেকে আলাদা করে। এদের উপরের চোয়ালে কোন দাঁত ছিল না। এরকম উদ্ভট প্রাণী কিন্তু জীবনযুদ্ধে প্রচণ্ড ভাবে সফল ছিল, এবং এদের জীবাশ্ম পাওয়া যায়ে উরাল পর্বত, চীন, উত্তর আমেরিকার পশ্চিম উপকুলে, এমনকি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়াতেও। এদের মুখের অসাধারণ গঠন দেখে এদের খাদ্যাভ্যাস নির্ণয় করা সহজ নয়, কিন্তু অনেক গবেষকদের মতে এরা স্কুইড জাতীয় প্রাণী খেত। অদ্বিতীয় গঠনের এই প্রাণী ২২.৫ কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়।

এই দুটি প্রাণীর গল্পে আমরা দেখতে পাই, যে বিবর্তনের ফলে কিছু প্রাণী আপাতভাবে অদ্ভুতুড়ে হলেও কোটি কোটি বছর ধরে বেঁচে থাকে। কখনও কখনও কোটি কোটি বছর বেঁচে থাকার পরও হার মানতে বাধ্য হয়, ছাপ রেখে যায় জীবাশ্মের দ্বারা। এই বিবর্তন বিলুপ্তির মধ্যে অনেক নতুন প্রজাতি আসবে, আবার চলে যাবে। হয়তো বা রেখে যাবে জীবাশ্ম, বা মুছে যাবে দাগ না কেটেই।

We are accepting the entries for IBAC

X