Homemade Fish Food
খাদ্যভ্যাস গত ভাবে মাছেরা মূলত তিন ধরনের , শাকাহারী, মাংসাশী ও সর্বভূক। এদের কথা চিন্তা করে আমরা তিনটে আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে খাদ্য তৈরির চেষ্টা করতে পারি।
(১) শাকাহারী মাছ : গোল্ড ফিশ, কার্প, প্লেকো, মবুনা, ট্রফিয়াস ইত্যাদি মাছেরা শাকাহারী। এদের জন্য খাদ্য তৈরি নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে করা যায় -• উপকরণ :১ আঁটি পালংশাক, ২ টো গাজর, ১ টি শশা, ১টি সিদ্ধ আলু, ১০০ গ্রাম মটরশুঁটির দানা,১৫০ গ্রাম ময়দা, ২-৩ কোয়া রসুন, ১ টি মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট,২ টি স্পাইরুলাইনা ট্যাবলেট।•পদ্ধতি : উপকরণ গুলি এক এক করে একটি মিক্সিং মেশিন দিয়ে ভালোভাবে মিক্সিং করে পেস্ট করে নিন। এরপর সেটিকে একটি পাত্রে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন। এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট ছোট অংশ কেটে নিয়ে ব্যবহার করুন। যদি ফ্রিজ না থাকে সেক্ষেত্রে ওই মিশ্রণটি ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে ছোট ছোট অংশে কেটে নিয়ে Airtight অবস্থান রেখে দিতে দিন এবং ব্যবহারের পূর্বে কিছুটা সময় জলে ভিজিয়ে নরম করে নিন ।
(২) মাংশাসী মাছ : বেশিরভাগ আফ্রিকান হ্যাপলোক্রোমিস সিকলিড, আমেরিকান সিকলিড, ক্যাটফিস ইত্যাদি মাছরা মাংশাসী। তাদের জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে খাবার তৈরি করা যায় – • উপকরণ : ১০০ গ্রাম চিংড়ি মাছ, ১০০ গ্রাম কোন বড় মাছের মাংসল অংশের কিমা (আমি ব্যক্তিগতভাবে স্থলচর প্রাণীজাত প্রোটিন বা terrestrial meat ব্যবহার করিনা, যদিও অনেকেই ছাগল বা মুরগির হৃদপিণ্ড ব্যবহার করেন) , ১ টি ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট,১টি মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট২ কোয়া রসুন, ৫০ গ্রাম মটরশুঁটি•পদ্ধতি : এক্ষেত্রেও পদ্ধতি আগের মতোই। সব উপকরণ গুলি এক এক করে একটি মিক্সি মেশিনে দিয়ে ভালোভাবে মিক্সিং করে পেস্ট করে নিন। এরপর সেটিকে একটি Airtight পাত্রে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন। এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট ছোট অংশ কেটে নিয়ে ব্যবহার করুন। তবে এক্ষেত্রে ফ্রিজ না থাকলে রোদে শুকিয়ে স্টোর করার চেষ্টা করবেন না । কারণ এরফলে যে চরম দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে তারফলে আপনাকে বাড়ি ছাড়া তো বটেই, পাড়া-প্রতিবেশি খবর পেলে এলাকাছাড়া হতে হতেই পারে ।
(৩) সর্বভূক মাছ : এদের মধ্যে মলি, গাপ্পি, বেশিরভাগ টেট্রা, গোরামি, বার্ব, সাইপ্রিনিডি পরিবারের কিছু সদস্য পড়ছে এদের ক্ষেত্রে ভেজিটেবল ও প্রোটিনের মিলিত উপকরণে তৈরি সুষম খাদ্য প্রয়োজন। • উপকরণ : শুটকি মাছের গুঁড়ো ১০০ গ্রাম, ময়দা ১০০ গ্রাম, মটরশুঁটি ৫০ গ্রাম, গাজর ১ টি, রসুন ১-২ কোয়া,মাল্টিভিটামিন ১ টি, স্পাইরুলাইনা ১ টি, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট ১ টি। • পদ্ধতি : আগের মতোই উপকরণ গুলি এক এক করে একটি মিক্সি মেশিন দিয়ে ভালোভাবে মিক্সিং করে পেস্ট করে নিন। এরপর সেটিকে একটি পাত্রে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন। এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট ছোট অংশ কেটে নিয়ে ব্যবহার করুন।এই তিন প্রথাগত পদ্ধতিতে খাবার তৈরি ছাড়াও কতগুলো বিকল্প পদ্ধতিতে লাইভ ফিডিং এ অভ্যস্ত মাছের জন্য খাবার সংগ্রহ করা যায়, যেমন পুকুর থেকে ডাফনিয়া নেটের সাহায্য ডাফনিয়া সংগ্রহ, মশার লার্ভা সংগ্রহ, মাটির কেঁচো সংগ্রহ, পিঁপড়ের ডিম, নালসার ডিম সংগ্রহ করে মাছের খাওয়ানো যায়। সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে এই লক ডাউনের পরিস্থিতিতে বাড়ি থেকে বাইরে বেড়িয়ে এই ধরনের খাবার সংগ্রহ যথেষ্ট রিস্কি বলাই বাহুল্য।
পরিশেষে কয়েকটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন বাড়িতে বানানো খাবার একবারে অনেকটা বানিয়ে স্টোর করার চেষ্টা করবেন না, দু-এক সপ্তাহ জন্য অল্প পরিমাণে বানিয়ে রাখুন, শেষ হলে আবার বানান। এই ধরনের খাবার বেশিদিন স্টোর না করাই ভালো। তাছাড়া হোম মেড খাবারের কনা জলের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার একটা প্রবনতা থাকে, সেজন্য overfeeding যেন কিছুতেই না হয় সেদিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। সাথে খুব ভালো ফিল্ট্রেশন, সাইফনিং, মেজর ওয়াটার চেঞ্জ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সঙ্গের ভিডিওতে হাতের কাছে থাকা কাঁচামাল দিয়ে কম সময়ে কিভাবে ওমনিভোর বা সর্বভূক মাছেদের জন্য খাবার তৈরি করবেন তা দেখানো হল। আশাকরি পাইরেটরা ঘরোয়া পদ্ধতিতে মাছের খাবার কিভাবে তৈরি করবেন সে ব্যাপারে একটা ধারণা পাবেন।Homemade Fish Food তৈরী নিয়ে কারোর মনে কোনো প্রশ্ন, কোনো দ্বিধা-সংশয় থাকলে আমাদের জানান, যতটা সম্ভব উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। অবশ্যই জানান যদি আপনার কোনো Homemade Fish Food রেসিপি জানা থাকে।সাবধানে থাকুন, সুস্থ থাকুন, এবং অবশ্যই ঘরে থাকুন।