Labidochromis caeruleus(Yellow Lab/ Banana Cichlid)
সেই কবে রাজ কাপুর বলে গেছেন “The Show must go on” অর্থাৎ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও হবি চলবে, তাই পাইরেটস ডেনের রেগুলার সেগমেন্ট গুলোও চলতে থাকবে। সেই তাগিদেই আজকের লেখালেখি, আজকের অতিথি Yellow lab cichlid (Labidochromis caeruleus) অ্যাকোয়ারিয়ামের দোকানের বিখ্যাত হলুদ মাছ ; হাটে, পথে-ঘাটে যেখানেই রঙিন মাছ বিক্রি হতে দেখবেন সেখানেই দু-চারপিস এদের পাবেন । আদরের ব্যানানা, বাঙালির কলা মাছ। যাঁরা এক্কেবারে আনকোরা নতুন শুরু করেছেন তাঁরা থেকে বাঘা মালাউই কিপার হলুদ রঙের সিকলিড বললেই এদের কথা সবার আগে সবার আগে মনে আসতে বাধ্য । তবে জানেন কি এই কলাবাগানের সব কলা কিন্তু হলুদ নয়, হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন সব ল্যাবিডোক্রোমিস হলুদ হয় না মশাই, কেউ কেউ সাদা, কেউ কেউ নীলচে পর্যন্ত হয়। তবে যে রঙের হোক না কেন স্বভাবে সবাই মোটামুটি শান্ত সামাজিক সিকলিড যাঁরা আফ্রিকার মালাউই হ্রদের আদিবাসিন্দা । ওই হ্রদের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে যে পাথুরে এলাকা আছে সেখানেই এদের ঘর সংসার। ওখানেই অগভীর জলে পাথরের মধ্যে লুকিয়ে-চুরিয়ে জীবন যাপন করতে ভালোবাসে। পাথরের উপর যে শ্যাওলা হয় সেগুলো দিয়েই লাঞ্চ-ডিনার সারে। তবে সাথে ছোটখাটো পোকামাকড়ের লার্ভা, শামুকের বাচ্চা ইত্যাদিও অল্প-স্বল্প উদরস্থ করে। সেদিক দিয়ে দেখলে প্রাকৃতিক ভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরা শাকাহারী হলেও, কখনো কখনো সামান্য প্রানীজ প্রোটিনের উপর নির্ভর করে। অ্যাকোয়ারিয়ামেও তাই খাবার দেওয়ার সম ভেজিটেবল ফুডের উপর গুরুত্ব দেওয়াই ভালো। যেহেতু পাথর খুঁটেই এদের দিন চলে, তাই পাথরের দখল নিয়ে এদের যতো মারামারি। সাধারণত একটি পুরুষ মাছ কোন একটি পাথরের খাঁজে নিজের বাসা বানায়, এবং সংশ্লিষ্ট পাথরটিকে নিজের সম্পত্তি মনে করে, সেখানে দ্বিতীয় কোন পুরুষ কু-নজর দিয়েছে বুঝলেই কেলিয়ে বৃন্দাবন দেখিয়ে দিতে পছন্দ করে। ওই পাথরের উপরেই ওরা নাচানাচি করে মেয়েদের ইমপ্রেস করে ওখানেই ছানাপোনা উৎপাদনের জন্য যা যা করার দরকার তাই তাই করে এবং ডিম পাড়লেই মায়ের মুখের ভরসায় সব দায়-দায়িত্ব দিয়ে পুরুষ কেটে পড়ে। মা’য়েরা প্রায় মাস খানেক না খেয়ে-দেয়ে সেই বাচ্চাদের মানুষ করে। •অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখতে হলে :সবচেয়ে ভালো হবে ঝাঁকে রাখলে, ১০-১২ টার ঝাঁকে ২-৩ টে মেল, বাকিগুলো ফিমেল। একটা ২০০ লিটারের অ্যাকোয়ারিয়াম। প্রচুর পাথর, পাথরের গায়ে শ্যাওলা, ফাঁক ফোঁকড়ে হলুদের হুটোপুটি খেলা জমে যাবে বস। সাবস্ট্রেট অবশ্যই সুক্ষ বালি। ট্যাঙ্ক মেট চাইলে অন্যান্য ছোট সাইজের কম আগ্রাসী মবুনাই ভালো। ইয়োলো টেইল এসিই, কেনই, পিনদানি, রেড জেব্রা, ডেমাসনি, যোহানি, মেইনগানো এদের উপযুক্ত সঙ্গী। তবে সঙ্গীসাথী যাইহোক না কেন সফল “কলাবাগান” করতে হলে চাই বড় জায়গা, খুব ভালো ফিল্ট্রেশন এবং সঠিক ডায়েট। এগুলোর অভাব হলেই ফিন-রট, ব্লটিং, স্মোকি আই ডিজিজ ইত্যাদি এদের জন্য ওঁৎ পেতে থাকে। জলের pH ৭.৫-৮.৬ , TDS ৬০০-৮০০ পর্যন্ত, এবং তাপমাত্রা ২৪-২৬ °সে রাখলেই এগুলো থেকে দূরে থাকা যায়। তাহলে আর কি, এখানেই শেষ করি? কি বল্লেন? ছানাপোনা? এক ঝাঁক পুষেই দেখুন না, পিল-পিল করে বাড়ি ভরিয়ে দেবে, আর তখন “হা রে রে রে” বলে জাল-প্লাস্টিক নিয়ে হানা দেবার জন্য ডাকত দল তো রেডিই হয়ে আছে …
Image – Google