Basics of Malawi keeping – Part 1

fishkeeping simplified

Basics of Malawi keeping – Part 1

পর্ব : ১
১৮৮০ সাল, জার্মান ইম্পেরিয়াল আর্মি থেকে ছুটি নিয়ে জার্মান মেজর হেরম্যান উইলহেম ওয়াইজম্যান আফ্রিকায় নামলেন,সাথে পল পোগ্গে লক্ষ্য সেন্ট্রাল আফ্রিকান কঙ্গো নদীর অববাহিকা। সেখানে চষে বেড়ালেন, উপাত্ত সংগ্রহ করলেন, প্রসপেক্টিং করলেন এবং শেষ পর্যন্ত পোগ্গে থেকে গেলেও ওয়াইজম্যান ইস্টার্ন আফ্রিকান স্টেটস হয়ে (বর্তমানে তানজানিয়া) জাঞ্জিবারের দিকে চলে এলেন। পরে সেখানে থেকে দেশে ফিরে রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির ফাউন্ডার্স গোল্ড মেডেল পেলেন । এই ঘটনার দুই বছর পর জার্মান সরকার আফ্রিকার দুই বড় লেক মালাউই এবং টাঙ্গানিকায় দুটি স্টিমার নামানোর পরিকল্পনা করলে মালাউইর স্টিমারটির নাম হেরম্যান ওয়াইজম্যানের সম্মানে তাঁর নামে রাখা হল। সামনাসামনি উদ্দেশ্যে যাই থাক, যার আসল উদ্দেশ্য ছিল রিফ্ট ভ্যালি অঞ্চলে জার্মান আধিপত্যের বার্তা দেওয়া। সেই সময় কলোনি এক্সপ্যানশন চলছে৷ আফ্রিকাকে কলোনিয়াল ইউরোপীয়রা যেমন খুশি ভাগ করে নিচ্ছে , বেলজিয়ামের রাজা হেরম্যান ওয়াইজম্যানের সাহায্যেই কঙ্গো ফ্রি স্টেটস এর সূচনা করেছেন। এদিকে ব্রিটিশরাও বসে নেই। রিফ্ট ভ্যালির দখল তাদের চাই, সুযোগ এলো ১৬ ই অগাস্ট ১৯১৪ সালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরু, ব্রিটিশ নেভির গানবোট এস এস গুয়েন্ডোলেন, ওয়াইজম্যান স্টিমারের এক মাইল দূর থেকে ক্যাপ্টেন এডমুন্ড রোডসের নির্দেশ একটি মাত্র গোলা ছুঁড়লো, একগোলা তেই ওয়াইজম্যান স্টিমারের ভবলিলা সাঙ্গ হয়ে গেল। এবং ব্রিটিশরা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রথম নৌ যুদ্ধে জয় পেল। কিন্তু গল্প এখানে থামলো না। যুদ্ধ লেগে রইল তবে এই যুদ্ধ আর গোলাগুলি নিয়ে লড়া হলো না, কাঁচের বাক্সে মালাউই-এর রঙিন সিকলিডদের নিয়ে শুরু হলো, মালাউই আফ্রিকার এক আশ্চর্য হ্রদ যা মোটামুটি বয়সে নবীন হলেও সিকলিডের প্রাচুর্যে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। অজস্র প্রজাতির রং-বেরঙের সিকলিড এখানে খুব দ্রুত বিবর্তন করে চলেছে । যেমন তাদের রং তেমন তাদের আচার-আচরণ। রঙিন সিকলিড ধরে কারা আগে ইউরোপের বাজারে পাঠাবে এবং কারা আগে ক্যাপ্টিভ ব্রিডিং করে রঙিন মাছের বাজার ধরবে সে যুদ্ধ লেগেই রইল।
এসব ঘটনার বহু বছর পর আজও যখন কোন নতুন মেছো মালাউই সিকলিডদের দেখেন তখন নিশ্চয়ই ডেভিড লিভিংস্টোনের মতোই মুগ্ধ হন । যিনি এই হ্রদের সৌন্দর্য দেখে বলেছিল Lake of Stars, আক্ষরিক অর্থেই মালাউই সিকলিডরা অ্যাকোয়ারিয়ামের স্টার।
তবুও মালাউই নিয়ে আগ্রহ আর হতাশা কোনটারই শেষ নেই, এই মাছেরা চোখ ধাঁধানো রং দিচ্ছে তো এই মাছ মারামারি করে মরছে। দোকানে গিয়ে রং দেখে মনে হচ্ছে সব মাছ কিনে বাড়ি নিয়ে চলে আসি, এদিকে বাড়ির চার ফুটের ট্যাঙ্কটাও মালাউই করার জন্য খুব ছোট মনে হচ্ছে। এসব অভিজ্ঞতা আমরা যাঁরা কমবেশি মালাউই করেছি তাঁদের সবারই হয়েছে। অনেক ঠকেছি, ঠকে-ঠকেই শিখেছি। শিখতে শিখতে মনে হয়েছে যাঁরা নতুন, যাঁরা শিখতে চায় তাদের জন্য তো কিছু লেখা যায়, সেই তাগিদ থেকেই এই লেখা। তবে গুরুগম্ভীরভাবে নেওয়ার দরকার নেই। লেখাটা শুধুই আমার অভিজ্ঞতা। মালাউইর রাজা-গজা বাদ দিয়ে কমন ম্যানের কথা ….
•• গোড়ার কথা ( ফার্স্ট চ্যাপ্টার, সিরিয়াসলি না নিলেও চলবে) : মালাউই মস্ত হ্রদ, অনেক মাছ থাকে, যাঁরা থাকে তাদের সিংহভাগ একটা পরিবারের, যাঁদের বলে সিকলিড বা “পাথরের মাছ ” কারণ মালাউই একটি রিফ্ট লেক, তাই এই হ্রদের তলাটা পাথরে ভর্তি, সেই পাথরের খাঁজে খাঁজেই এইসব রঙিন মাছ লুকিয়ে থাকে। মোটামুটিভাবে এই হ্রদে ১৭০০-র কাছাকাছি সিকলিড প্রজাতি পাওয়া যায়, যাঁরা দুটি মুল ভাগে বিভক্ত; এক, উমবুনা/মবুনা (Mbuna) দুই, হ্যাপ বা Haplochromis
সাধারণভাবে বলা যায় মবুনারা আকারে ছোট, মূলত শ্যাওলাভোজি, হ্যাপেরা আকার তুলনায় বড় মূলত মাংশাসী, তবে হ্যাপেদের মধ্যেও একটা দল আছে যাঁরা কঠোরভাবে মৎসভোজী না হলেও জলজ পোকামাকড় ধরে খায়, সাথে শ্যাওলা জলজ উদ্ভিদ একটু-আধটু খায় এদের বলে Aulonocara বা পিকক। মবুনা হোক বা পিকক এদের মধ্যে কয়েকটা জিনিস কমন এরা সাধারণত হারেমে থাকে, যেখানে একটি শক্তিশালী পুরুষ একাধিক স্ত্রী মাছেদের নিয়ে বসবাস করে, পুরুষ ও স্ত্রী সহযোগে এই গ্রুপ টাকে কলোনি বলে । বসবাস করার জন্য পুরুষ মাছ হ্রদের নীচে বালি খুঁড়ে বাসা বানায়, স্ত্রী মাছ সবচেয়ে শক্তিশালী পুরুষের বাসা পছন্দ করে, এবং সেখানে বসবাস করে। পুরুষ মাছ কলোনি ও টেরিটোরি (বাসার এলাকা) দুই রক্ষা করার জন্য অনন্য পুরুষ মাছেদের সাথে মারাত্মক মারামারি করতে পারে।
সাধারণত মালাউইতে বেশিরভাগ সিকলিড সেক্সুয়ালি ডাইমর্ফিক হয়। অর্থাৎ অনুজ্জ্বল স্ত্রীর তুলনায় পুরুষ মাছ অনেক বেশি রঙচঙে হয়, রং দেখিয়েই স্ত্রী মাছেদের আকৃষ্ট করে। যে মাছ যতবেশি সুস্থ সবল সে তত বেশী রং দেখানোর সক্ষমতা রাখে।
মহিলা মাছেদের ক্ষেত্রে ব্রিডিং পরর্বতী বাচ্চা পালন একটি বড় দায়িত্ব, সাধারণত পুরুষ মাছ বাচ্চাদের দায়িত্ব নেয় না, ব্রির্ডিং করেই খালাস, ব্রিডিং এর পর স্ত্রী মাছ নিষিক্ত ডিম মুখে করে রেখে তা দিতে থাকে। এবং ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়ে স্বাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত খওয়া-দাওয়া ছেড়ে বাচ্চাদের বাচ্চাদের ক্যাঙারুর মতো মুখের মধ্যে রেখে আদর-যত্ন করতে থাকে । যেহেতু মালাউইতে মাছেদের ঘনত্ব খুব বেশি এবং ছোট বাচ্চাদের অনন্য মাছেদের শিকার হয়ে যাওয়া খুব স্বাভাবিক তাই মালাউই সিকলিড নির্বিশেষে এই মাউথ ব্রুডিং পদ্ধতি অবলম্বন করে।
এই পর্যন্ত সাধারণ জ্ঞান জেনে নিয়ে ট্যাঙ্ক শুরু করা ভালো। এতে যেমন যে মাছটাকে পুষছি তাকে বুঝতে সুবিধা হয়, তেমনি লং টার্মে পুষতে হলে এদের বিহেভিয়ার বুঝতেও সুবিধা হয়।
•• মালাউই সিকলিড রাখতে হলে :
মালাউই রাখতে হলে আগে থেকেই ঠিক করতে হবে কি মাছ রাখবো, কতগুলো রাখবো এবং কি অনুপাতে রাখবো। মালাউই সিকলিড পোষার সাধারণ তিনটি প্রচলিত পদ্ধতি আছে।
(১) সোলো ফিশ : একটি সিঙ্গেল মেল মাছকে পোষা, সেক্ষেত্রে মাছটি অ্যাকোয়ারিয়ামে একা থাকবে সর্বাধিক যত্ন পাবে। এবং সর্বোচ্চ রং দেখানোর সুযোগ পাবে।
(২) মেল অনলি ট্যাঙ্ক : এক্ষেত্রে শুধুমাত্র রঙিন পুরুষ মাছেদের পোষা হয়, তুলনামূলকভাবে অনুজ্জ্বল স্ত্রী মাছেদের পোষা হয় না। এই ট্যাঙ্কের সুবিধা হচ্ছে নানারকম রঙিন মাছেদের একজায়গায় রাখার ফলে সামগ্রীকভাবে ট্যাঙ্কটই সবচেয়ে বেশি রঙিন লাগে। এবং ফিমেল না থাকায় মেল মাছেদের ব্রিডিং অ্যাগ্রেসন দেখানোর সুযোগ কম থাকে। তবে যেহেতু মেল মালাউই সিকলিডরা আক্রমণাত্মক আগ্রাসী স্বভাবের তাই মেল অনলি ট্যাঙ্কের সাইজ খুব বড় না হলে সমস্যা তৈরি হতেই পারে। তবে মেল অনলি রাখলেও কখনোই মবুনা বা হ্যাপদের একসাথে রাখা উচিত নয়, কারণ মবুনা শাকাহারী এবং হ্যাপ মাংশাসী। এছাড়াও প্রিডেটর হ্যাপদের সাথে মবুনাদের খাদ্য খাদকের সম্পর্ক তাই ছোটবেলায় একসাথে থাকলেও বড় হলেই ওরা মবুনা ধরে লাঞ্চ-ডিনার করবে এটাই স্বাভাবিক।
(৩) কলোনিতে পোষা : এক্ষেত্রে একটি প্রজাতির একটি ব্রিডিং গ্রুপকে একসাথে রাখা হয়, একটি বা দুটি (বিশেষ প্রয়োজনে, বিশেষ প্রজাতির ক্ষেত্রে দুটি, যদি যথেষ্ট জায়গা থাকে)পুরুষ মাছেদের সাথে ৭-১০ টি পর্যন্ত স্ত্রী মাছ রাখা হয়। এক্ষেত্রে মাছগুলো সবচেয়ে ভালোভাবে থাকতে পারে এবং সর্বাধিক ব্রিডিং-এর সুযোগ পায়। ডমিনেন্ট পুরুষ মাছটি সাধারণ অ্যাকোয়ারিয়ামে রাজত্ব করে এবং বাকি মাছেদের নিয়ন্ত্রণ করে, নিয়ন্ত্রণ জনিত সাম্যতা বজায় রাখতে এদের কলোনিতে প্যাক অর্ডার সৃষ্টি হয়,অর্থাৎ গুরুত্বের বিচারে দলে মাছেদের ক্রমিক অবস্থান তৈরি হয় । এই পরিবেশে পুরুষ মাছ সর্বাধিক রং দেখায় এবং ব্রিডিং পিট (অবতল আকৃতির বাসা) খোঁড়া থেকে শুরু করে মহিলাদের ইমপ্রেস করতে ব্রিডিং ড্যান্স সব বিহেভিয়ারই ভালোভাবে দেখায়। যদি একাধিক পুরুষ মাছ কলোনিতে থাকে তবে নিজেদের মধ্যে এলাকা দখল নিয়ে আগ্রাসনও শুরু হয়। কখনো কখনো পুরোনো ডমিনেন্ট মেলকে তাঁর সাম্রাজ্য (ফিমেল ও টেরিটরি) দখলের জন্য নতুন মেল চ্যালেঞ্জ করে। তবে চ্যালেঞ্জে যেই হেরে যাক তার পালিয়ে যাবার সুযোগ যদি না থাকে অর্থাৎ যথেষ্ট বড় ট্যাঙ্ক না থাকে তবে নতুন রাজার হাতে পুরোনো রাজা বা চ্যালেঞ্জারের মৃত্যু অবধারিত।

 

We are accepting the entries for IBAC

X